খুলনা জেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নতুন কমিটিতে সম্প্রতি দেখা গেছে ক্ষমতার অপব্যবহার ও সুবিধাভোগীদের আধিপত্যের পরিস্থিতি। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই বিতর্কিত পরিস্থিতিতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ত্যাগী ও পরিচিত কর্মীদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ মূলত, এই কমিটি গঠনের পেছনে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী ও সুবিধাভোগীদের স্বার্থরক্ষা করার জন্য বিশেষ তৎপরতার বিষয়টি উঠে এসেছে।
গতকাল শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান জানান, আওয়ামী লীগের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এই সমিতির নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ীদের হাতে। শেখ বাড়ির মাধ্যমে বেশিরভাগ কমিটি গঠন করা হতো, যেখানে যারা এই সুবিধা পেতো তারা ছাড়া অন্যরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতো। ২০১৪ সালে শেষ দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন হলেও এরপর আর কোনও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর এখনো পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি পাচ্ছে; এতে সরকারি হাসপাতালের ঠিকাদারি, ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন বিতর্কিত কার্যকলাপ বেড়ে যায়।
নতুন গঠিত এই কমিটিতে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এই কমিটিতে সভাপতিত্ব করছেন খান মাহতাব আহমেদ, যিনি কোনও ব্যবসায়ী না হলেও তাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে জনপ্রিয় সুবিধাভোগী খান সাইফুল ইসলামকে, যিনি খুলনা শহরের হাসপাতালের ওষুধ সরবরাহ চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও বিভিন্ন অনিয়মের জন্য অভিযুক্ত। তিনি অতীতেও আওয়ামী লীগের বেশ কিছু কমিটিতে ছিলেন এবং এখনো বড় পদে রয়েছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া অন্য সদস্যরা মধ্যে রয়েছেন মোঃ আব্দুল লতিফ শেখ, আনিছুর রহমান লিটু, মোঃ ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, হেদায়েতুল ইসলাম পলাশ, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ আব্দুল মান্নান মোড়ল, মোঃ আবিদউজ্জামান, মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ তৌফিক হোসেন। এ সকল সদস্যরা পূর্বে সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে সুবিধাভোগের অভিযানে জড়িয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া শেখ বাড়ি ব্যবহারে সমিতির সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংসের জন্য দায়ী বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে, এসব অসঙ্গতি বন্ধ করে অবিলম্বে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। তারা বলছেন, যদি ১২০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন সম্পন্ন না হয়, তাহলে পরবর্তী কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন এবং খুলনা জেলাব্যাপী ফার্মেসী দোকান বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খান মাহতাব আহমেদ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং যারা এই কমিটি ঘোষণা করেছে তারা সময় মতো, যাচাই-বাছাই করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ এই সব অভিযোগ এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পক্ষের পক্ষ থেকে 공식ভাবে প্রত্যাখ্যান বা স্বপক্ষে ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।