ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শীতের আগাম সবজিতে দাম কমে স্বস্তি, ডিম-মুরগির দামও নিম্নমুখী

কয়েক সপ্তাহ আগে যেখানে সবজির কেজির দাম ৬০ টাকার নিচে নামতে পারত না, এখন পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। বাজারে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কমে এসেছে। গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে।

দুই সপ্তাহ আগে ডিমের দাম দেড়শো টাকার উপরে উঠে গিয়েছিল, কিন্তু এখন সেই দাম কমে দেড়শো টাকার ভিতরে এসেছে। ডজনের দাম কিছু দফা কমে এখন ১৩০ টাকায় পৌঁছেছে। ব্রয়লার মুরগির দামও কমে এসেছে। অন্যদিকে, ২২ দিনের সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ মাছের সরবরাহ আবার শুরু হয়েছে তবে এর দাম এখনও বেশ চড়া। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এই চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বিশেষ করে শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি সহ অন্যান্য সবজির দাম কমার কারণে অন্যান্য সবজির বাজারেও স্বস্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে ডিম ও মুরগির বাজারে কিছুটা প্রস্তাবনীয় পরিবর্তন এসেছে।

বর্তমানে শীতের আগাম শিমের কেজি দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি ছিল। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিসা এখন ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। মূলার কেজি এখন ৪০ থেকে ৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এছাড়াও, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ও কচু ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, পটল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। লম্বা বেগুন, করল্লা, বরবটি ও কচুর লতি বর্তমানে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বাজারে খোলা। কাঁচা মরিচের দাম কমে ১০০ টাকার মধ্যে এসে পৌঁছেছে, তবে পাড়া-মহল্লার দোকানে এই দামের থেকে কিছুটা বেশি বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা কাঁচাবাজারের একজন সবজি বিক্রেতা সুজন মোহাম্মদ বলেন, এখন সবজির দাম নিয়ে ক্রেতাদের উদ্বেগ কম। শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা করে কমেছে।

অন্যদিকে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে ইলিশ মাছের বিক্রি আবার শুরু হয়েছে। তবে এখনো দাম তেমন কমেনি। রামপুরা বাজারে ছোট ইলিশের (৩০০-৪০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০০ টাকা, আর মাঝা-মাঝি আকারের ইলিশের দাম ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকায় উঠেছে। অন্যান্য মাছের দামও গত কয়েক সপ্তাহের মতোই চড়া রেখেছে।

শীতের আগাম সবজির দাম কমার ফলে ডিম ও মুরগির বাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। গত সপ্তাহে এক ডজন ডিমের দাম ছিল প্রায় ১৪০ টাকা, কিন্তু এখন সেটি কমে ১৩০ টাকায় এসেছে। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানে এখনও ডিমের দাম ১৪০ টাকা হয়েই বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি এখন কেজিতে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক সপ্তাহ আগে ছিল আরও দামী। তবে সোনালি জাতের মুরগির দাম আগের মতোই থাকছে; কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। গরুর মাংসের দামও অপরিবর্তিত, প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের বাজার বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দেশি পেঁয়াজের মানসম্পন্ন কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, আর দেশি রসুনের দাম ১০০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।

মসুর ডালের বাজারেও ভালো খবর রয়েছে। দেশের বাজারে চাহিদামত মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। আমদানি করা মসুর ডালের দাম কেজিতে এখন ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায় নেমে এসেছে, যা কিছুটা কমে গেছে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় কেজি দরে, তবে ভোজ্যতেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।