ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আকাশবাড়ি হলিডেজের ছেড়াছাড়ি ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ

প্রিয় দেশবাসী, ট্রেড পার্টনার্স, কাস্টমার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। সম্প্রতি জানা গেছে যে, আকাশবাড়ি হলিডেজের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনী ও অসাধু কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে। এই চারজন ব্যক্তি—ইমতিয়াজ, আবু বকর রাব্বি, তৌহিদুল ইসলাম মাসুম এবং তাজরীন আক্তার—অত্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত থাকলেও তারা লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন ও সুবিধা গ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকের কোটি টাকার গাড়ি আছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, ফাউন্ডার মোর্শেদ জুয়েলসহ পাঁচজনের মধ্যে তাঁদের প্রত্যেকই বিভিন্ন সময় মিথ্যা ডিক্লারেশন দিয়ে কোম্পানির নথিপত্রে অসৎ কৌশলে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন। তারা ২৭ আগস্ট শেষবারের মতো অফিস থেকে রিজাইন লেটার জমা দেন এবং এরপর আরও কিছু অনৈতিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণের চেষ্টা করেন। তবে, কেউই এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র পাননি। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ইমতিয়াজ ও তাজরিন কৌশলে একটি জাল অর্থনৈতিক ছাড়পত্র তৈরি করে কোম্পানির জুনিয়র এক কর্মকর্তাকে প্রলোভন দিয়ে আতœসাৎ করেছে।

আরও তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচজনই গত ছয় মাস ধরে নতুন কোম্পানি গঠন, সফ্ট লঞ্চিং ও ব্যবসায়িক কাজে লিপ্ত ছিল। তারা বেআইনি উপায়ে আকাশবাড়ি হলিডেজের গুরুত্বপূর্ণ নথি, ডাটা বেস, কাস্টমার কন্ট্যাক্টস, পাসপোর্টের কপি ও হার্ড ডিস্ক নিজের নিজের কোম্পানিতে অবৈধভাবে ব্যবহার করছিল। আমার কাছে সেই সমস্ত প্রমাণ প্রমাণস্বরূপ পঞ্চাশটিরও বেশি শক্তিশালী দোহাই রয়েছে, আমি প্রস্তুত তা প্রকাশ করতে। অভিযোগের সঙ্গে আরো বলা হয়েছে, প্রায় ১০০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের প্ররোচনায় অফিসে বসে থেকে কোম্পানির কাস্টমার ও ডাটাবেজ চুরি করে নিজেরা ট্রান্সফার করছে। এর ফলে আমি কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি সহ্য করছি। আকাশবাড়ি হলিডেজের প্রতিটি আয় ট্যাক্সের আওতায় আসে, এটি বছরে অন্তত অর্ধেক কোটি টাকা ট্যাক্স প্রদান করে এবং বিদেশী রেমিটেন্স হিসেবে বছরে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা আয় করে থাকে।

প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের কি এমন পরিস্থিতি যেখানে, চাকরি নিয়ে বেতন নিতেই বেআইনী কর্মকাণ্ড চালানো যায়? লাখ লাখ টাকা মূল্যের কাস্টমার ডাটাবেজ ও তথ্য নিজেরাই চুরি করে স্বার্থ হাসিল করা কি অনুমোদন পায়? এই কোম্পানিগুলোর ক্ষমতা এতই বেশি যে আইন ও নীতিমালা অমান্য করেও নতুন কোম্পানি গড়ে ক্ষতি করতে পারে? তাদের পক্ষে কি কোনো ইন্ধনদাতা বা দুর্বৃত্তরা থাকছে? জালিয়াতি ও জাল ছাড়পত্রের মাধ্যমে তারা নৈতিকতা ও আইনের তোয়াক্কা না করে বেআইনী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।

এমনকি, এই কোম্পানিগুলির মধ্যে অনেকেরই এখানকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে তাদের যোগদান করিয়ে নেয়া হচ্ছে। মনীষা আখতার, খলিল, মিজান, সুদীপ্তসহ অনেকে ইতিমধ্যে এই অপরাধে যুক্ত হয়েছে। বেলেল্লাপনার পাশাপাশি মনীষা আখতার অন্যায়ভাবে কোম্পানির হার্ডওয়ার ও নথিপত্র নষ্টের অভিযোগে ধরা পড়েছে।

আমি দৃঢ়ভাবে বলছি, এই ৫ জন বেইমানের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে না পারলে, আমি মাত্র ৩ মাসের মধ্যে ১৯০ জন কর্মচারী ও তাদের পরিবারের স্বার্থ বাদ দিয়ে কোম্পানি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব। ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির মূল সম্পদ হলো সঠিক ডেটাবেস, দক্ষ কর্মী ও বিশ্বস্ত ট্রান্সপোর্ট পণ্য। এই সম্পদ আমাকে চুরি করে নেওয়া হয়েছে। আমি উচ্চ পর্যায়ের সরকারের দ্বারস্থ হয়েছি, অভিযোগ দাখিল করেছি, তবে এখনো কোনো মামলা কার্যকর হয়নি। আমি ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু আমার অর্থপ্রদানের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির দ্রুত বিচার প্রয়োজন। এতে প্রভাবিত হবে কমপক্ষে ৫,০০০ মানুষ, যাঁরা এই ক্ষতিতে পড়েছেন।

প্রমাণের ভিত্তিতে আমি প্রতিদিন অফিসে থাকব, সকলের জন্য প্রমাণ দেখার ও সত্য যাচাই করার আমন্ত্রণ রইল।

আমাদের এই শিল্পে কাজ করা সবাই যেন সচেতন হন—আকাশবাড়ি হলিডেজে শুধু চাকরি করে কোটি টাকা গাড়ি কেনা, বেআইনীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়। অথচ যারা সৎ, তাদের জন্য এই পথ নেই।

লেখক: তৌহিদুল আলম মিল্কী
আজকের খবর/ওআর