আজ (১৭ আগস্ট) প acclaimed চলচ্চিত্রের কালজয়ী অভিনেত্রী শবনমের জন্মদিন। এই বিশেষ দিন উপলক্ষে রূপনগরের এই বংশোদ্ভুত চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পাকিস্তানে সিতারা-ই ইমতিয়াজ পদক গ্রহণের জন্য গিয়েছিলেন, সেখানে তিনি সাজগোজ করেছিলেন জামদানি শাড়িতে। এনিগমা টিভির মাধ্যমে দেশের সাংস্কৃতিক পরিসরে তিনি এই সুন্দর মুহূর্তটি উপভোগ করেছেন। এছাড়া, অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত পাকিস্তানি পপ গায়ক আলমগীর, পাকিস্তানের কিংবদন্তি অভিনেত্রী জেবা আলী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ।
ভিডিও বার্তায় পাকিস্তানি এই গায়ক বলেন—“লাহোরে যখন আমি গানের আসর পরিচালনা করতাম, তখন রবীন দা ও শবনম ভাবী একেবারে পুরনো ও ঘনিষ্ঠ পরিবারে মত করে আমাকে আপ্যায়ন করেছেন। তারা আমাকে তাদের বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করতেন। এই পরিবারটি আমার জন্য খুবই আপন, এখান থেকে আমি তাদের অভিভাবকসুলভ সান্নিধ্য পেয়েছি। সেই থেকেই আমার সম্পর্ক ও ঘনিষ্ঠতা এই পরিবারের সাথে জুটে গেছে। আমি উক্ত অনুষ্ঠানে গিটার ও গানের মাধ্যমে শবনমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি।”
শিল্পীর এই কণ্ঠে তার অনুভূতি প্রকাশ পায়, এবং তিনি বড় পর্দার এই তারকার জন্য তাদের শুভকামনা জানান।
এনিগমা টিভির চেয়ারম্যান শেখ রায়হান আহমদ, নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদুল ইসলাম শান্তনু এবং অনুষ্ঠান প্রযোজক ওয়ালিদ উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানস্থলে। শবনমকে স্বাগত জানান হোস্টরা ফুলের তোড়া দিয়ে।
অন্যদিকে, অভিনেত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জেবা আলী তার স্মৃতিচারণায় বলেন—“দূরে থাকলেও আমি মনে করি, তুমি আমাদের হৃদয়ে আছো। প্রতিটি নিঃশ্বাসে তুমি আমাদের সঙ্গে থাকো। তোমার জন্মদিনে তোমাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।”
পরিচালক কাজী হায়াৎ, যাঁর সঙ্গে বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন শবনম, বলেন—“আম্মাজান সিনেমাটি যখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছিল, তখন শবনম ম্যাডাম বলেছিলেন—‘হায়াৎ সাহেব, আপনি আমার শবনম না ভুলে আমার সিনেমা ‘আম্মাজান’ বানিয়ে দিয়েছেন।’ এই অভিনেত্রী আজ আমাদের সকলের প্রিয়, একজন জীবনে পাওয়া সেরা সম্মান ও অবদান। আমি আপনাকে অনেক অনেক শুভকামনা ও শুভেচ্ছা জানাই।”
শবনম প্রথম বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৬১ সালে, তখন বয়স মাত্র ১৫। মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে তিনি নায়িকা হিসেবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। এর আগে, ১৯৫৯ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে নৃত্যশিল্পী হিসেবে তার অভিনয় জীবন শুরু হয়।
১৯৬২ সালে উর্দু ভাষার ‘চান্দা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। আশির দশক পর্যন্ত, তিন দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অভিনয় করে চলেন এবং তার সাবলীল কৃতিত্ব বজায় রাখেন। তার শেষ উল্লেখযোগ্য ছবি হলো ১৯৯৯ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’।
পাকিস্তানে তার দীর্ঘ ও সফল ক্যারিয়ার শেষে, আজকের এই বিশেষ অনুষ্ঠানটিতে তিনি দোয়েল ওটিটি ও এনিগমা টিভির অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি সাক্ষাৎকার দেন, যা সম্প্রচারিত হবে আজ বিকেল ৪টায়। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি তার স্মৃতিচারণ, ক্যারিয়ারের ইতিহাস ও ব্যক্তিগত অনুভূতিগুলো ভাগ করে নিতে।
গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও এনিগমা টিভির সিইও এ এইচ এম ফাহমিদুল ইসলাম বলেন—“আমি সত্যিই খুব আনন্দিত ও অভিভূত। এত বছরের পর এই সম্মাননা পেয়ে আমি অনেকটা সারপ্রাইজড। এনিগমা টিভির এই উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা রইল।”
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের রেকর্ডিং হবে আগামী রবিবার, ১৭ আগস্ট বিকাল ৪টায়। এই আয়োজন শুধু জন্মদিনের আনন্দ উদযাপন নয়, বরং এটি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের এক অনবদ্য অধ্যায় আবারও উজ্জ্বল করার এক অপূর্ব সুযোগ।
শবনমের সাক্ষাৎকারটি নেন এনিগমা টিভির সিইও ফাহমিদুল ইসলাম। এছাড়া, চ্যানেল আইয়ে অনুষ্ঠানটির নাম ‘শবনম: রূপনগরের রাজকন্যা’, যেখানে উপস্থাপনা করেছেন সাংবাদিক আবদুর রহমান। এই অনুষ্ঠান রাত ৮:২৫ মিনিটে প্রচারিত হবে।
অভিনেত্রী শবনম অভিনয় করেছেন লম্বা ক্যারিয়রে—‘এ দেশ তোমার আমার’, ‘রাজা সন্যাসী’, ‘হারানো দিন’, ‘আমার সংসার’, ‘কখনো আসেনি’, ‘চোর’, ‘জোয়ার ভাটা’, ‘জুলি’, ‘নবারুণ’, ‘নাচঘর’, ‘নাচের পুতুল’, ‘সন্ধি’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘সহধর্মীনি’, ‘আখেরি স্টেশন’ ও আরও অনেক চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্রের প্রথম জীবনে তিনি রহমানের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন, পরে রাজ্জাক, নাদিম, মোহাম্মদ আলী, ওয়াহেদ মুরাদ ও শেখ জাভেদের মতো খ্যাতনামা নায়কদের সাথে অভিনয় করেন। আজকের খবর ও মিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, শবনমের দীর্ঘ ক্যারিয়ার ও জীবনযাত্রা এই আয়োজনের কেন্দ্রে।