আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে যুবদল আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যারা বিভিন্ন ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচনটি পেছানোর চেষ্টা করছে, তারা কখনো দেশের বা গণতন্ত্রের পাশে নেই। বরং তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে, দেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধী।
সালाहউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, খালেদা জিয়া শুধু একজন নেতা নন, তিনি এক ইতিহাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তিনি তার শিশু সন্তানদের নিয়ে বন্দিত্বের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে দেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চলেছিল, এবং তিনি শহীদ জিয়াউর রহমানের হত্যার পর স্বৈরাচারী সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। এর ফলে তিনি দেশের আদর্শি নেত্রীর মর্যাদা অর্জন করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। ১৯৯৬ সালে দেশের জনগণের দাবিতে তিনি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন। এই সব সংগ্রামের মধ্যদিয়ে তিনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য আলোর দিশারী হয়ে উঠেছেন, তার ৮১তম জন্মদিনে আমরা প্রার্থনা করি, তিনি দীর্ঘায়ু হোন যেন দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য এই আলো জ্বলজ্বল করে।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাদের দেশের মানুষ সামগ্রিক রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক পথনির্দেশনা পাচ্ছে খালেদা জিয়ার কাছ থেকে। তিনি আমাদের বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ সহজ করতে হবে। আমরা ইতিমধ্যেই সরকারের সঙ্গে বারবার আলোচনা করেছি। দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তি এখন সময়ের সঙ্গে একত্রিত হয়েছে, এবং জাতির ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলে আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে—এটাই আমাদের আশা।
তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের জন্য গণতন্ত্রের সংগ্রাম অপ্রতিরোধ্য। আমাদের সন্তানরা এই জন্য রক্ত দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, অনেকেকে পঙ্গু ও অন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য এই দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। যদি আমরা সত্যিই গণতান্ত্রিক ও সুবিচারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে আমাদের must না-ই বা অতিরিক্ত ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে বক্তব্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি করছে, তারা দেশের স্বার্থের জন্য নয়; তারা নিজের স্বার্থের জন্য এই লেখাজোকা করছে। তাঁরা চাইছেন না যে নির্বাচন সম্পন্ন হোক, তারা চেষ্টা করছে নির্বাচন বিলম্বিত বা বানচাল করতে। তবে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ এবং যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশাবাদী যে দেশের জনগণ ভবিষ্যতে সব রকমের বাধা অতিক্রম করে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এগিয়ে যাবে। সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ও রাজনৈতিক দলের উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য একসঙ্গে কাজ করা। তাঁর আহ্বান, সবাই যেন এই ঐক্য ধরে রাখতে এবং গণতন্ত্রের পথ সুগম করতে একসাথে এগিয়ে আসেন।