আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচন নিয়ে সকল ধরনের অনিশ্চয়তা দূর করতে এবার একান্তই স্পষ্ট ও পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেন, যেখানে একটি সংবাদ লিঙ্কও তিনি অন্তর্ভুক্ত করেন।
প্রেস সচিব তাঁর স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রতি মনোযোগ দিয়ে, তিনি বিশ্বাস করেন নির্বাচনের সম্ভাবনা বাতিল বা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ, বাংলাদেশ, প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের পথে রয়েছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন শিগগিরই এর জন্য নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করবে।
শফিকুল আলম আরও জানান, কিছু মাস ধরে কিছু দল ও ব্যক্তির এক হলেও, তারা স্বাধীনভাবে মন্তব্য করে চলেছেন। তবে, তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং সকল দিক থেকে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্যাপক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি নতুন ডিসি ও এসপি পোষ্টিং সম্পন্ন হয়েছে, যার কারণে অযৌক্তিক প্রশ্ন উঠে না।
প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি আগের মতোই স্থিতিশীল এবং কোনও বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়নি। জুলাই মাসে গৃহীত চার্টার বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার ফলে দলগুলো ও নাগরিকরা আগামী দিনগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, কি করে কেউ এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দাবি করতে পারেন যে, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব নয়? এছাড়াও, তিনি ইঙ্গিত দেন কেন কিছু পক্ষ ১৯৯৬, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো পরিস্থিতির উল্লেখ করছেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষের বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ এই বিশ্বাস বহাল রেখেছেন যে, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কোনো দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখা মানে নির্বাচনকে অবিশ্বাস্য বা অর্ধেক অংশগ্রহণমূলক করে তোলা।
শফিকুল আলম বলেন, “আমাদের মনে আছে, নেতাদের হাতে রক্ত লেগে থাকলে তারা যেন কোনোভাবেই নির্বাচনে আসতে পারে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বিশ্বাস করছে না, আরও কোন ক্ষমা ও বিচার ছাড়া, এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ আবার স্বাভাবিক রাজনীতি শুরু করতে পারবে।” গত ঘটনাগুলো এই কথাকেই প্রমাণ করে — বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, যেমন বাসে আগুন আর ককটেল ছোড়া, দলীয় রাজনীতিতে পুনরায় প্রবেশের জন্য এই দুটির পক্ষ থেকে সহায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জামানতহীন ভিডিও তৈরি ও ছড়ানোর মাধ্যমে কিছু নেতার মনোভাব এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রচার দেখা যাচ্ছে, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। পুরোনো ভুয়া তথ্যবাহী ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তবে, তিনি মনে করেন, এই সবই শেষমেষ চিন্তার বিষয়, যে মানুষের বয়স্ক ও বিচক্ষণ সমাজ এই বিভ্রান্তির বিভাজন করবে।
প্রেস সচিব স্পষ্ট করে বলেন, মানুষ নিজের বিবেচনা ও বিচার-বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। সবাই বুদ্ধিমান; কাউকেই অন্ধ বা বিভ্রান্ত করে রাখা যাবে না। তিনি দ্বিধা না করে জানাচ্ছেন, তারা বিশ্বাস করেন যে, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবেনা’ এবং ‘অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে ইনশাআল্লাহ।’ এই মন্তব্য সহ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শফিকুল আলম।









