ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

গুলশানে তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত ১৯৬ নম্বর বাড়ি

দীর্ঘ ১৭ বছর নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে শিগগিরই দেশে ফিরতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি রাজধানীর গুলশান-২ এর এভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন, যেখানে ইতিমধ্যেই বসবাসের উপযোগী করে বাড়িটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো তাঁর ফেরার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি, তবে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায় যে তিনি খুবই শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ৬ অক্টোবর বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে তিনি আশা করেছিলেন, খুব দ্রুতই তিনি ফিরে আসবেন, ইনশাআল্লাহ। প্রাথমিকভাবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তার ফিরে আসার প্রস্তুতি চললেও সিদ্ধান্ত সবকিছু পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে এবং তারেক রহমান নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন কখন ফিরে যাবেন। দলের একাধিক নেতা বলে থাকেন, নভেম্বরের শেষে তার ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি। সম্প্রতি দলীয় সূত্রগুলো জানায়, পরিস্থিতির বিবেচনায় তারেক রহমানের ফেরার সময় এখন ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে পুনঃনির্ধারিত হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেছেন, নির্বাচন तফসিল ঘোষণা হওয়ার পর তিনি দেশে ফিরবেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই বাড়িটি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মালিকানাধীন, যা সম্প্রতি তারেক রহমানের নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। বাড়ির অভ্যন্তর ও বাহ্যিক পরিবেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে এটি সম্পূর্ণভাবে বাসযোগ্য করে তোলা হয়েছে। বাড়ির ভেতর ও বাইরে সংস্কারকাজ এখন প্রায় শেষের পর্যায়ে। খালেদা জিয়ার পাশে তাঁর ছেলে তারেক রহমান থাকবেন, যা দলীয় কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করছেন দলের নেতা-কর্মীরা। বাড়িটি নির্মাণের সময় ১৯৮১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার এটি তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। এত দিন সেটির মালিকানা খালেদা জিয়ার কাছে থাকলেও নামজারি হয়নি। সম্প্রতি সরকার একটি মধ্যবর্তী সরকারের অধীনে বাড়ির নামজারির কাগজপত্র তার হাতে তুলে দেয়। বাড়িতে তিনটি শয়নকক্ষ, ড্রয়িং, ডাইনিং, লিভিং রুম, সুইমিংপুলসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। গুলশান-২ এর এভিনিউর শেষ মাথায় থাকা ১৯৬ নম্বর বাড়িতে আগে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের প্রতিনিধির দপ্তর ছিল। ছয় মাস আগে তারা ওই বাড়িটি ছেড়ে চলে যায়, এরপর বাড়িটি তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়। সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন থেকে দেশে এসেছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, যারা বাড়িটির পরিদর্শন করে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। তারেক রহমানের জন্য এই বাড়িটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। তিনি ২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন এবং ধীরে ধীরে দলীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালে তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করে যাচ্ছেন, ভার্চুয়াল সভা ও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি বিভিন্ন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, তবে গত বছরের আগস্টে সরকারের পতনের পর সব মামলায় অব্যাহতি পান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।