ঢাকা | মঙ্গলবার | ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ চারটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে: গোলাম মাওলা রনি

অভিনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি গণমাধ্যমে বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আওয়ামী লীগ চারটি বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এক বক্তব্যে তিনি এই পরিকল্পনাগুলোর স্পষ্ট বিবরণ দেন।

প্রথমত, রনি বললেন, আওয়ামী লীগের মূল কৌশল বা ‘প্ল্যান এ’ হলো—তারা এখনো মনে করছে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে পদত্যাগের কথা বলা হলেও, এখন বিভিন্ন এলোমেলো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে পুরো পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষের মধ্যে দ্বিধা দেখা দিয়েছে যে, শেখ হাসিনা আসলেই পদত্যাগ করেননি। সরকারও জানিয়েছে, তাদের কাছে পদত্যাগের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। যদিও শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, তিনি কখনোই পদত্যাগ করেননি, আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

গোলাম মাওলা রনি মন্তব্য করেন, এই ‘এ’ পরিকল্পনা সফল করতে মূলত গোপনে ভারতের সহায়তা এবং বিদেশি এজেন্টদের মাধ্যমে কাজ চালানো হচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো আটকায় না থেকে যেকোনো মূল্যে আবার প্রধানমন্ত্রীর রূপে ফিরে আসা।

দ্বিতীয় পরিকল্পনা বা ‘প্ল্যান বি’ হিসেবে রনি উল্লেখ করেন—বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক হয়। এই প্রক্রিয়াকে তিনি ‘রিকনসিলিয়েশন’ বলতে পছন্দ করেন। এর আওতায়, বিএনপি বা অন্য কোনো দল ক্ষমতায় আসুক বা নির্বাচন হোক, আওয়ামী লীগ চায় একটি রিকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য নতুন মাল্টিপ্ল্যান নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসা।

তৃতীয়ত, রনি বললেন, যদি নির্বাচন হয়, তবে পাকিস্তানে ইমরান খান যেমন জেল খেটে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, ঠিক একই রূপে আওয়ামী লীগও তাদের প্রার্থী বা সমর্থকদের নিজেদের নম্রতা দেখিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে চাইছে। এর জন্য দলীয় ব্যানার ছাড়াই তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচ করবে। এই প্রক্রিয়ায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বা ‘আর’ এর সমর্থনও তারা আশ্রয় নিচ্ছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, আওয়ামী লীগের কিছু ব্যবসায়ী, নিউট্রাল ব্যক্তি বা জনজনের মাঝে যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, তাদেরকে সক্রিয় করে তোলার চেষ্টা চলছে।

শেষত, রনি বলেন, চতুর্থ ও শেষ পরিকল্পনা বা ‘প্ল্যান ডি’ হলো—যেকোনো মূল্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বানচাল করা। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো ভারতীয় সহযোগিতা নিয়ে কিছু লোক দিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করা, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এর ফলে বিরোধী প্রার্থীরা যেন ভয়-আতঙ্কে ডুবে যান এবং নির্বাচনের মাঠ যেন বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়—এটাই তাদের উদ্দেশ্য।

এটাই ছিল গোলাম মাওলা রনির বিশ্লেষণ, যা ভবিষ্যতের রাজনীতির ইঙ্গিত বহন করে।