ঢাকা | মঙ্গলবার | ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইইউ বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পাঠাবে বিশাল প্রতিনিধি দল: রাষ্ট্রদূত মিলার

বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বিশাল প্রতিনিধি দল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এটি হবে ২০০৮ সালের পর ইইউর প্রথম পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এই তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ইইউর এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশনটি এখনো চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। দলটিতে সম্ভবত ১৫০ থেকে ২০০ জন সদস্য থাকবেন, যার মধ্যে কেউ কেউ ভোটের প্রায় ছয় সপ্তাহ পূর্বে এবং বাকিরা ভোটের এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে উপস্থিত হবেন।

রাষ্ট্রদূত মিলার আরো বলেন, ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ইইউ একটি পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি, তিনি উল্লেখ করেন যে, স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণেও ইইউ সহায়তা দেবে।

প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকে উভয়পক্ষ সাংবিধানিক সংস্কার, নির্বাচন প্রস্তুতি, বিচার বিভাগ ও শ্রম খাতে সংস্কার, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে।

মিলার বলেন, জুনে অনুমোদিত জাতীয় সনদকে তিনি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে আরও মসৃণ করবে। তিনি শ্রম আইন সংস্কার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জোরদার করার পদক্ষেপগুলোকেও ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

মিলার বিশ্বাস করেন, এসব পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোর মাধ্যমে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ইইউর অব্যাহত সহযোগিতা থাকবে। তিনি এই নির্বাচনকে ‘দেশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের একটি সুযো্গ’ বলে মন্তব্য করেন।

আরও তিনি জানান, ইইউ বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করার বিভিন্ন উপায়ও আলোচনা হয়, যার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির সম্ভাবনা, বিমান ও নৌপরিবহন খাতে নতুন সুযোগের অনুসন্ধান এবং মানব পাচার ও অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলায় সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনালের উন্নয়ন ও পরিচালনায় জাপানি শিপিং কোম্পানি এ.পি. মোলারমায়ার্সকের সঙ্গে অনুবর্তী একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে।

রাষ্ট্রদূত বললেন, ডেনমার্কের এই প্রতিষ্ঠান প্রায় ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে বাংলাদেশে লালদিয়া রানীকে একটি আধুনিক ও বিশ্বমানের টার্মিনালে রূপান্তর করতে চান।

সাংবাদিকদের এক সাক্ষাৎকারে তারা অবাধ নির্বাচন, প্রার্থীদের যোগ্যতা, মানবাধিকার রক্ষা এবং ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা করেন। সূত্র: বাসস।