ঢাকা | সোমবার | ১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে শওকত হোসেনের মানহানির মামলা

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি এবং গাজীপুর ২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মো. শওকত হোসেন আজ শনিবার বলেছেন, সরকার তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি ‘চাঁদাবাজির’ ভিডিওকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিকৃত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করে। তিনি জানান, গোলাম মোহাম্মদ শওকত হোসেনের পক্ষ থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৫ এ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমি পবিত্র ওমরা আদায় শেষে দেশে ফিরে জানতে পারলাম, আমার নামে একটি ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিওতে আমার গাড়ি বিক্রির লেনদেনের দৃশ্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে তা চাঁদাবাজির অভিযোগে দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি একটি একপেশে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা।

শওকত হোসেন ব্যাখ্যা করেন, ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই একজন ব্যক্তি, আফজাল হোসেন, তার ছেলের প্রতিষ্ঠান ‘এম/এস কার সাম্রাজ্য’ থেকে ৪০ লাখ টাকা দিয়ে একটি নোয়া স্কয়ার গাড়ি ক্রয় করেন। ঋণদানের জন্য তিনি ১০ লাখ টাকার চেক জামানত হিসেবে রেখে দেন। এরপর তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করেন। তখনই আফজাল হোসেন গোপনে এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সেটি বিকৃতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, যেন এটি চাঁদাবাজির লেনদেন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

শওকত আরও বলেন, এখানে থাকা একজন ব্যক্তি, যিনি এখন নিজেকে ‘জিয়া মঞ্চের সভাপতি’ পরিচয় দেন, অতীতে গাজীপুর মহানগর যুবলীগের পরিচয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। পোস্টার এবং লিফলেটে আওয়ামী লীগের নেতাদের ছবি ব্যবহার করতেন। জুলাই আন্দোলনের পর তার অবস্থান পাল্টে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের পর বিএনপি ও জাতীয়তাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে একটি নেতিবাচক ন্যারেটিভ তৈরি করতে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রচেষ্টা চালানো হয়। এই ভিডিওর প্রচারও সেই উদ্দেশ্যেই যোগ**।

সংবাদ সম্মেলনে কাশিমপুর জমিদার বাড়ি দখলের প্রসঙ্গও ওঠে। তিনি জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে তিনি এই বাড়ির অর্ধেক অংশ বৈধভাবে কিনেছিলেন। এরপর ২০১২ সালে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের নির্দেশে তার অনুসারীরা বারবার বাড়িতে হামলা চালালে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। ২০২৩ সালে আদালত তাকে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং নতুন রেকর্ডে তার মালিকানা স্বীকৃতি দেয়।

শওকত হোসেন সরকার বলেন, তার বিরুদ্ধে ৪২ টি মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন থানায় কারাভোগ ও হয়রানির শিকার হলেও কখনো জাতীয়তাবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।

তিনি বলেন, যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা মাঠে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়, তখন কুৎসা রটিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার অপচেষ্টা চালায়। গাজীপুরবাসী তার রাজনৈতিক পথের সত্যতা জানেন বলে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার বিচার আমার জনগণের আদালত ও আল্লাহর কাছে তুলে ধরেছি। কোনও অপপ্রচারের জন্য তিনি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুত আছেন, এবং তিনি চান, যারা এই অপপ্রচার চালিয়েছেন, তারা আদালতে এসে নিজের বক্তব্য প্রমাণ করুন। তিনি নিশ্চিত করেন, সত্য একদিন প্রকাশ পাবে,
ইনশাআল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, বশির আহাম্মেদ বাচ্চু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ূন কবির রাজু, জয়নাল আবেদীন তালুকদার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রহিম কালা, কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, সদর মেট্রো থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোস্তাফা নীনা সহ আরও অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।