ঢাকা | বুধবার | ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সারাদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শান্তি ও মানবতার মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর পবিত্র জন্ম ও ওফাতের দিন

আজ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ, যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র একটি দিন। এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্ম ও মৃত্যু উভয়ই ঘটে। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের মহা নগরী মক্কায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। এতকাল আগে এই পবিত্র দিনে, অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়ে মানবজাতির মুক্তির জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর প্রকৃষ্ট অবতরণ করেন। এই সময়ের আরবের বধির অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, সমাজে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা ব্যাপক। মানুষ হানাহানি, বিবাদ ও অপকর্মে লিপ্ত ছিল; বলি ছিল জাহেলিয়াতের যুগ। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবতার মুক্তির আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে পাঠান। মহানবী (সা.) এই মহান কাজের জন্য অতি অল্প সময়ের মধ্যে আল্লাহর প্রেমে আকৃষ্ট হয়ে যান এবং হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। তিনি বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন ২৫ বছর বয়সে, এবং মাত্র ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। এই দিনটি উপলক্ষে সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পবিত্র এ দিনটি পালন করা হচ্ছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে, যার মধ্যে প্রধান স্থান টুঙ্গিপাড়া ও কেন্দ্রীয় স্থানগুলো। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পৃথক বাণী পাঠ করা হয়েছে। সকালে দেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করা হয়, এবং রাজধানীর প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাপত্রে জাতীয় পতাকা ও কালিমা তায়্যেবা শোভা পাচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানসূচি চালাচ্ছে, যেখানে রয়েছে কিরাত ও নাত প্রতিযোগিতা, কবিতা পাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আরবি খুতবা রচনা, সেমিনার এবং স্মারক প্রকাশ। এছাড়াও, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে দুই সপ্তাহের জন্য ইসলামী বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও অন্যান্য মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠানপ্রচারে ব্যস্ত; পত্রপত্রিকাগুলো প্রকাশ করেছে মহানবীর জীবন ও আদর্শের উপর আলোকপাত করে ক্রোড়পত্র। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান মিলাদ, আলোচনা সভা, দোয়া, ও মাহফিলের মধ্য দিয়ে একে পালনে অংশগ্রহণ করছে। শিশুদের জন্য পাঠ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভাও হয়েছে। দেশের সকল হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা, শিশু নিবাস ও বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোও যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে দিনটি পালন করছে। এই দিনটির মাধ্যমে মহানবীর শিক্ষা, শান্তি, সহনশীলতা, মানবতা, নারী মর্যাদা ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা সমগ্র জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।