ঢাকা | বুধবার | ২০শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

বিমান বাংলাদেশে কারিগরি ত্রুটি: কঠোর সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বেশ কয়েকটি ফ্লাইটে কারিগরি ত্রুটি দেখা দেওয়ায় বিমান কর্তৃপক্ষ কঠোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং আস্থা বজায় রাখতে সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদক্ষেপ চালু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা দ্রুত এবং দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সংস্থার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশান কবীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা-আবুধাবি ফ্লাইটে টয়লেটের ফ্লাশ সংক্রান্ত ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১ জুলাই থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া কারিগরি সমস্যা বিশ্লেষণের জন্য চার সদস্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ফ্লাইটের রেকর্ড, অপারেশনাল প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে ঘটনার মূল কারণ খুঁজে বের করবে। পাশাপাশি, কেউ যদি অবহেলা বা গাফলতি করেন, তবে তার দায়িত্ব নির্ধারণ করা হবে।

তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এই তদন্ত কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এছাড়াও, দায়িত্ব নিশ্চিত করতে একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। দুজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে এবং অন্য কয়েকজনের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক প্রকৌশলী শাস্তিমূলক বদলির শিকার হয়েছে, অন্য একজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

বিমানের কারিগরি দক্ষতা বাড়াতে বিভিন্ন আউটস্টেশনে (যেমন জেদ্দা, দুবাই, মদিনা, দাম্মাম, আবুধাবি ও শারজাহ) অতিরিক্ত চাকা মজুদের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই জন্য প্রয়োজনীয় চাকা সংগ্রহের জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। জেদ্দায় বিমানের চাকা ফেটে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে পরিচালককে (ফ্লাইট অপারেশনস) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশলী ও প্রকৌশল বিভাগের সুপারভিশন জোরদার করা হয়েছে।

১৯ আগস্ট থেকে রাত্রিকালীন বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ শিফট চালু করা হয়েছে, যা সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে সহায়তা করবে। এর পাশাপাশি, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সম্পূর্ণ পর্যালোচনা চলমান। বোয়িংয়ের সঙ্গে আলোচনা করে কম্পোনেন্ট সার্ভিসেস প্রোগ্রাম (সিএসপি) এর তালিকা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে এবং স্পেয়ার পার্টসের লিস্ট নতুনভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে।

যন্ত্রাংশের যথাযথ ব্যবহার ও সংগ্রহের জন্য টেলরড পার্ট প্যাকেজ (টিপিপি) ব্যবস্থা পর্যালোচনার মধ্য রয়েছে। একই সঙ্গে, প্রকৌশলীদের পুনঃপ্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন অ্যাপ্রেন্টিস মেকানিক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত দক্ষতা আরও বাড়াবে।

উপভোক্তা নিরাপত্তা ও আস্থা বাড়াতে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সব ধরনের প্রযুক্তিগত নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তা মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।