এক যুগেরও বেশি সময় আগে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত (নিতাই) হত্যা মামলায় আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি, চারজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায় রোববার (১৭ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মো. রেজাউল করিম ঘোষণা করেন, আসামিদের উপস্থিতিতে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সবাইই ডা. নিতাইয়ের গাড়িচালক কামরুল হাসান অরুণ, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু ওরফে মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, মো. হোসেন মিজি ও সাঈদ ব্যাপারী। এ ছাড়াও প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাইদুল, মাসুম ওরফে প্যাদা মাসুম, মো. আবুল কালাম ওরফে পিচ্চি কালাম এবং ফয়সাল। তাদেরকেও এক সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরও একজন, রফিকুল ইসলাম নামে আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। দণ্ডের পাশাপাশি তাকেও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে এই রায় আসে, সংশ্লিষ্ট আদালতের আইনজীবী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ২০১২ সালের ২৩ আগস্ট মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ডা. নিতাই তার নিজের বাড়িতে খুন হন। ওই সময় তার বাবা তড়িৎ কান্তি দত্ত বনানী থানায় ওই ঘটনার মামলা করেন। তদন্তের সারাংশে জানা যায়, চুরি করার সময় আসামিরা ডা. নিতাইকে হত্যা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গাজী আতাউর রহমান ২০১৩ সালে ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন, যেখানে উল্লেখ করা হয় যে, মিন্টু, রফিকুল, পিচ্চি কালাম, সাইদুল, প্যাদা মাসুদ ও ফয়সাল এই ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপরই ২২ জুলাই আদালত চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন। সমগ্র প্রক্রিয়ায় ২৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় এবং পাঁচজন নিজ পক্ষে সাক্ষ্য দেন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২২ আগস্ট রাত ১১টার দিকে মহাখালী ডা. কোয়ার্টার্সের বাসায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে নিতাইয়ের মা দ্বিতীয় তলায় উঠলে প্রকাশ পায় তার বুক ও মাথায় রক্তাক্ত আহত অবস্থায় পড়ে থাকেন। আশপাশের লোকজন দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃতঘোষণা করেন। এজাহারে আরও জানানো হয়, চুরি করার সময় দেখে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরা নগদ পঞ্চাশ লাখ টাকা ও দুইটি স্বর্ণের বালা নিয়ে যায়।
